এই আসমান ও জমিনের সর্বোচ্চ আইন মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীস শরীফসমূহ, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন, আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে অনলাইনে একদল নাস্তিক ক্রমাগত কুরুচিপূর্ণ ও অসত্য তথ্য দিয়ে লিখে যাচ্ছে। এইসব নাস্তক্যবাদীরা ধর্ম অবিশ্বাস থেকে এসব লেখা লিখছেন এটা কোনোক্রমেই বলা যায়না বরং এইসব নাস্তিকরা ইসলাম বিদ্বেষ অবস্থান থেকে এইসব নোংরা ও কুরুচিপূর্ণ লেখালেখি করে সমগ্র ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসীদের আঘাতে আঘাতে জর্জরিত করতে চাইছেন এবং এটাই তাদেরমূল উদ্দেশ্য।
অনলাইনে এমন কুরুচিপূর্ণ লেখালেখি করেন এমন কয়েকজনের মধ্যে তাসলিমা নাসরিন, মুহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন, আসিফ মহিউদ্দিন,আরিফুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফুজ্জামান, কমল চন্দ্র দাস, আসাদ নূর, সামুন আলী, ওমর ফারুক লুক্স প্রমুখকে উল্লেখযোগ্য বলা যায়। আমাদের এই আজকের পর্বে মুহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন, আসিফ মহিউদ্দিন, মুহাম্মদ সাইফুজ্জামান ও তসলিমা নাসরিনকে নিয়ে তাদের ইসলাম্বিদ্বেষি কুরুচিপূর্ণ মনোভাব প্রকাশ করা হলো
[ছবিঃ মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন]
এর মধ্যে মুহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন মহানবী মুহাম্মাদ সা:কে যে নোংরা ভাষায় আক্রমণ করেছেন, তার জীবন সম্পর্কে এবং তাকে হেয় করে যে মিথ্যা কল্পকাহিনী রচনা করেছেন তাতে সাধারণ মানুষ খুবই আহত হয়েছেন। নবী সা:-এর নবুয়াতপ্রাপ্তির স্মৃতিবিজড়িত হেরা গুহা নিয়ে তার বিশ্লেষণ কোনোভাবেই শালীনতার মধ্যে পড়ে না। নবী মুহাম্মাদ সা:কে বরাবরই ‘মোহাম্মক’ (নাউজুবিল্লাহ) বলে সম্বোধন করেছেন এই ওয়াহিদ। এই ইসলাম বিদ্বেষী ব্লগার এথিস্ট এরা, এথিস্ট ইন বাংলাদেশ নামক ম্যাগাজিন ওয়েবসাইটে ক্রমাগত এই ধরনের কুরুচিপূর্ণ লেখা লিখে যাচ্ছে। এই লোকটি মুসলমানের ধর্মীয় রীতিনীতি নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক ও অশালীন ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে। যেখানে মুসলমানেরা নিজেদের পরিশুদ্ধ করার জন্য এক মাস সিয়াম সাধনা করেন; সাধনার পর যে ঈদ আসে সেটিকে কটাক্ষ করে যৌনতার প্রসঙ্গ টেনে বিদ্রুপ করা হয়েছে। নবী সা:-এর স্ত্রী উম্মুল মুমিনিনদের সম্পর্কে নোংরা ও কুৎসিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। সাহাবিদের বিরুদ্ধেও কুৎসা রটানো হয়েছে। যুদ্ধ বা জেহাদ সম্পর্কে বলা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের নোংরা কথা। এই নাস্তিক কুলাঙ্গার মুহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ব্যবস্থা না নিলে ইসলামের তৌহিদী ভাইয়েরাই ব্যবস্থা নিবে বলে আমরা মনে করি। আর এই ছাড়াও এমন কুলাঙ্গারদের জন্য আমরা আন্সার আল ইসলামের সৈনিকরা সর্বদা প্রস্তুত তাদের মাথা ধড় থেকে আলাদা করে ফেলার জন্য।
[ছবিঃ আসিফ মহিউদ্দিন]
আরেক ইসলাম বিদ্বেষি ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন। অনলাইনে ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছাড়ানো ও নাস্তিক্যবাদ প্রসারে তৎপর আরেক ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন। ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদের প্রতি তার চরম বিরাগ। নিজেকে নাস্তিক পরিচয় দেয়া শাহবাগ আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা আসিফ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মানুষের কোনো উপাস্য নেই, এমনকি আল্লাহও। হাজারো ঈশ্বরের সৃষ্টি মানুষের অমিত সৃষ্টিশীলতারই নিদর্শন।’ আসিফ অনলাইনের অন্যতম অ্যাক্টিভিস্ট। থাবা বাবার মতো ব্লগারদের সহযোগী। আসিফ কেবল নিজেই নাস্তিক নন, অন্যদেরও তিনি এ বিষয়ে উৎসাহ জুগিয়ে যাচ্ছেন। থাবা বাবার একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস, যেটি ২০১০ সালের ২৫ আগস্ট আপডেট করা, তাতে থাবা বাবা লিখেছেন, ‘ঈশ্বর কি আস্তিক না নাস্তিক’। এর প্রথম উত্তরদাতা হলেন আসিফ মহিউদ্দীন। তিনি লিখেছেন, ‘অবশ্যই নাস্তিক, মানে আমাগো দলে আর কী। ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন না তাকে কেউ সৃষ্টি করেছে। সে বলে সে স্বয়ম্ভু। তেমনি নাস্তিকও বিশ্বাস করে না তারে কেউ সৃষ্টি করেছে। অর্থাৎ ঈশ্বর একজন নাস্তিক।’
তার সমর্থক বেশির ভাগ ব্লগার এটাকে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন। তার সবচেয়ে হালকা একটি ব্লগ এখানে তুলে ধরা হলো। সামহয়্যারইন ব্লগে থাবা বাবা ব্লগটি লিখেছেন ৬ সেপ্টেম্বর ২০১০ সালে। তাতে- ‘মানবজন্ম ও একটি প্রশ্ন’ শিরোনামের ব্লগটি সরাসরি তুলে ধরা হলো
‘চারজন মানুষ, একজন একটি বিবাহিত দম্পতির সন্তান, একজন গভীর প্রেমে আবদ্ধ কিন্তু অবিবাহিত যুগলের সন্তান, একজন ধর্ষণের শিকার একটি অসহায় মেয়ের ধর্ষিত হওয়ার ফলাফল, শেষ জন একজন বেশ্যার সন্তান। এই চারজন মানুষের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? আমাদের সমাজ এই চারজন মানুষের মধ্যে শেষের তিনজনকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে। কেন? কারণ শেষের তিনজনের মা-বাবার মধ্যে কোনো বৈবাহিক সম্পর্ক নেই।’
আসিফ লিখেছেন, ‘আমাদের সাহিত্য থেকে শুরু করে সমাজ সবাই সন্তান জন্মের প্রক্রিয়াটাকে খুব সুন্দর করে ভালোবাসার চাদরে মুড়িয়ে আমাদের সামনে উপস্থাপন করে। বলা হয় দু’জন মানুষের ভালোবাসা থেকে সন্তানের জন্ম হয়। ভালোবাসা ছাড়া সন্তান জন্ম দেয়া সম্ভব না। এই চাদর মুড়ি দেয়া সত্যের সংজ্ঞায় ধর্ষিতা মেয়েটির সন্তান কি তাহলে মিথ্যে? অবিবাহিত একটি যুগল, যারা নিজেদের প্রচণ্ড ভালোবাসা নিয়ে একটি সন্তানের জন্ম দিয়েছে, তাদের সন্তান তাহলে সত্য না কেন? শুধু বিয়ে নামের একটা সামাজিক আচারের অভাবে? আর সন্তান জন্মদানের পরে তাদের প্রেমকে অবৈধ বলারই বা যুক্তি কোথায়?’
আসিফের মতে, ‘বিয়ে হলেই সেখানে খুব ভালোবাসা থাকবে তার কি কোনো ধরনের নিশ্চয়তা আছে? এখনো অগণিত বিবাহিত মেয়ে প্রতি রাতে তাদের স্বামী দ্বারা ধর্ষিত হয়। স্বামীর দ্বারা ধর্ষণের শিকার হওয়া মেয়েটি যখন তার ধর্ষক স্বামীর ঔরসে সন্তানের জন্ম দেয়, তখন তাকে বৈধতা দেয়ার যুক্তি কি? সেও তো একজন ধর্ষিতার সন্তান। এখনো আমাদের সমাজে বাড়ির বউদের স্ত্রী হিসেবে একটা অদৃশ্য বা অব্যক্ত ভূমিকা আছে। সেটা হলো তারা স্বামী বলে একজন পুরুষের যৌন ক্ষুধা মেটানোর একটা যন্ত্র, বিনিময়ে মেয়েটা স্বামীর কাছ থেকে খাওয়া-পরা-থাকার সুবিধা পায়। একজন প্রচলিত বেশ্যার সাথে এই মেয়েটার পার্থক্য একটাই, একজন বেশ্যাকে এক এক সময় এক একজন পুরুষের শয্যাসঙ্গিনী হতে হয়, আর এই মেয়েটিকে সারা জীবন একজন পুরুষের শয্যাসঙ্গিনী হিসেবেই কাটাতে হয়। একজন বেশ্যা যেমন আমৃত্যু তার আবদ্ধ জায়গায় শুধু দেহদান করে বন্দিজীবন কাটায়, এই মেয়েটিও তাই। তাহলে তার সন্তানের সাথে বেশ্যার সন্তানের পার্থক্য করা কেন?’
আসিফ লিখেছে, ‘মসজিদের ইমাম নির্বাচন করা প্রসঙ্গে কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে। অবৈধ প্রেমের ফল, বেশ্যার ছেলে, যুদ্ধশিশু ও ধর্ষণের ফলে জন্ম নেয়া অবাঞ্ছিত কেউ ইমাম হতে পারবে না। তাহলে বিয়ের নামে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির সন্তান কি মসজিদের ইমাম হতে পারে? ভাত-কাপড়ের বিনিময়ে যে মেয়েটি তার জীবন বিকিয়ে সারা জীবন স্বামী নামক একটা মানুষের যৌনচাহিদা মেটায় তার ছেলে কি মসজিদের ইমাম হতে পারে? আর বাবা-মায়ের প্রচণ্ড ভালোবাসা নিয়ে জন্ম হওয়া ছেলেটি, যার বাবা-মায়ের মধ্যে বিবাহ নামক সামাজিক বন্ধনটি ছিল না, মসজিদের ইমাম হতে তার দোষটাই বা কোথায়?’
[ছবিঃ মোহাম্মদ সাইফুজ্জামান]
আরেক ইসলাম বিদ্বেষি ব্লগার মুহাম্মদ সাইফুজ্জামান। তিনি নিজেকে সমকামী বলে বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও সাইটে ক্রমাগত প্রচারও করে যাচ্ছেন প্রকাশ্যে। সে ‘তার ব্লগে’এথিস্ট এরা’ নামক ম্যাগাজিনে মুসলমানদের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মোহাম্মদ সা:-কে নিয়ে লেখে, ‘মুহাম্মদ নিজেকে আইডল বা নিজেকেই ঈশ্বর না বলে একটি কল্পিত ঈশ্বরকে উপস্থাপন করেছেন। মানুষ যেন ব্যক্তিপূজায় আসক্ত না হয়, তাকেই যেন মানুষ ঈশ্বর বানিয়ে পূজা করতে শুরু না করে, সে ব্যাপারে তিনি কঠোর ছিলেন। তাই তার সমস্ত রচনাই তিনি আল্লার নামে চালিয়ে দিয়েছেন, এর রচয়িতা হিসেবে আল্লাকে সৃষ্টি করেছেন!’ আরেক লেখায় সে লিখেছে, ‘ধর্মান্ধ মুসলিমদের উত্তেজনার শেষ নেই। তাদের সকল আন্দোলন-সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে কে মুহাম্মদের ছবি আঁকলো, কে ধর্মের সমালোচনা করল। অথচ এতে মুহাম্মদ/আল্লার কখনই কিছু যাবে আসবে না। ব্যাপারটা এমন নয় যে, মুহাম্মদের ছবি আঁকা হলে স্বর্গে মুহাম্মদ সাহেব কষ্টে কাঁদতে কাঁদতে আত্মহত্যা করছেন! আফসোসের ব্যাপার হচ্ছে, তার উম্মতরা ঠিকই তাকে একজন পীরে পরিণত করেছে।’ ফেসবুকে বিশ্বনবীর একটি কাল্পনিক ছবিকে দেখিয়ে সে লেখে, এই ছবিটা মুহাম্মদের উন্মাদ উম্মতদের উদ্দেশ্যে একটা জবাব হতে পারে।’
ইসলামের বিধান পর্দা বা বোরকা নিয়ে সে লিখেছে, ‘বোরকা পরাটা সমর্থন করি না, বোরকা হিজাব মূলত আরবির বর্বর সমাজের প্রতীক। একটা সমাজে অত্যধিক বোরকার প্রাদুর্ভাব থাকা মানে হচ্ছে সেই সমাজের পুরুষগুলো সব এক একটা ধর্ষক, সেই ধর্ষকদের হাত থেকে বাঁচার জন্য সকল নারীকে একটা জেলখানা নিয়ে চলাফেরা করতে হয়। এইসব অজুহাতে নারীকে যুগ যুগ ধরে বন্দী করে রাখা হয়েছে, কখনো ঘরের ভেতরে, আবার কখনো বোরকা নামক চলমান জেলখানার ভেতরে।’
ইসলামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য দান নিয়ে কটা করে মুহাম্মদ সাইফুজ্জামান লিখেছে, ‘ধার্মিকদের মাথায় স্বার্থচিন্তা থাকে যে, এই উপকারে সে পরকালে হুর পাবে। এমনকি তারা কোনো দরিদ্র, দুস্থ, পঙ্গু মানুষকে দেখলেও বেশির ভাগ সময়ই স্বার্থপরের মতো নিজের কথাই ভাবে। আর যদি ওই পঙ্গু লোকটির কথা ভাবেও, তাতেও তাদের মাথায় থাকে স্বর্গে হুরী সঙ্গমের অশ্লীল চিন্তা।’ তার মতে, ‘জনগণের সুখ ও অর্থনৈতিক সাম্যের জন্য সর্বপ্রথম যা করতে হবে, তা হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের উচ্ছেদ।’
[ছবিঃ তসলিমা নাসরিন]
ইসলামের অন্যতম শত্রু কথিত লেখিকা তাসলিমা নাসরিন হচ্ছেন ইসলাম বিদ্বেষিদের প্রধানতম কুশীলবদের একজন। বাংলাদেশ কেন্দ্রিক ইসলাম বিদ্বেষিদের অন্যতম পরিচালক ও কথিত নারী স্বাধীনতার প্রবক্তা এই তসলিমা ইসলামের একজন শত্রু। নির্বাসিত লেখক তসলিমা নাসরিন সাম্প্রতিক সময়ে তার ফেসবুক হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ”কোরবানি ঈদের সময় গরু জবাই দেখতে দেখতে অথবা গরু জবাই করতে করতেই মুসলমানদের গলা কাটার অভ্যেসটা হয়েছে। আর এ কারনেই মানুষের গলা কাটাটা মুসলমানরা যত ভালো পারে, অন্যরা তত ভালো পারে না।
ঘটনা ঘটার ১ ঘণ্টার মধ্যে তসলিমা নাসরিনের এমন মন্তব্যে পাল্টা জবাব দিতে ছাড়েননি তার ফেসবুক ‘বন্ধুরা’। এসবের মধ্যে ব্যক্তিগত আক্রমণাত্মক মন্তব্য ছিলো চোখে দেখার মত। গোটা মুসলমানদের গোলা কাটার ওস্তাদ ও পবিত্র কুরবানীকে নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করে তাসলিমা এখনো ধর্মপ্রান মুসলমানদের জবাব খাচ্ছেন যার উত্তর তিনি কেন গোটা নাস্তিক সমাজ দিতে পারছে না এবং পারবেও না।
ইসলাম বিদ্বেষি এই তসলিমা নাসরিনকে আন্সার আল ইসলামের সৈনিকরা সমুচিত জবাব দেয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছে। সুযোগ পেলেই তার শরীর থেকে মাথাটা আলাদা করে ফেলা হবে।
চলবে… (পর্ব এক সমাপ্ত)